লৌহজংয়ে হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা

মাহাবুব আলম লিটন

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া ব্রাইট প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ১২ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্কুলের প্লে-গ্রুপের এক শিক্ষার্থী ছুটি হওয়ার পরও বাড়ি না ফেরায় তার পরিবার বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধান ও যাতায়াত বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় স্কুলের একজন শেয়ারহোল্ডার মোঃ ফিরোজ খান ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামানের ওপর অতর্কিত হামলা চালান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং হামলাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, সকালে স্কুলে এসে দেখি নার্সারি থেকে ক্লাস ফোর পর্যন্ত ছুটি হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর জানতে পারি, প্লে-গ্রুপের একটি বাচ্চা এখনো বাড়িতে পৌঁছেনি। অভিভাবকরা ফোনে বিষয়টি জানালে আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসা করি, বাচ্চাটিকে কার কাছে দিয়েছেন? তিনি বলেন, ‘জানি না।’ আমি বারবার জিজ্ঞাসা করলেও একই উত্তর পাই।

এতে আমি ক্ষোভ প্রকাশ করি এবং বলি, ‘বাচ্চার কিছু হলে দায়ভার কে নেবে?’ এরপর শিক্ষকরা চেঁচামেচি শুরু করেন। আমি বিষয়টি শান্ত করতে উপরে সভাকক্ষে যাই। কিছুক্ষণ পর শেয়ারহোল্ডার ফিরোজ খান এসে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। সে চিৎকার করে বলে, ‘তুই স্কুলের যোগ্য না।’ অথচ তার সঙ্গে আমার কোনো পূর্ববিরোধ ছিল না।”

ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পদ্মা সেতু উত্তর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত ফিরোজ খানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ফিরোজ খানকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”

স্থানীয়দের দাবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো সংবেদনশীল স্থানে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তারা দ্রুত দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *