কালিরচরের রাস্তার করুণ দশা

মোহাম্মদ সেলিম:
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের কালিরচরের রাস্তার বেহাল দশা বিরাজ করছে। এর ফলে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে এখানকার জনবসতিরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এটি সদরের চরাঞ্চলের শেষ সীমান্তের একটি দুর্গম এলাকা। এ এলাকাটির দক্ষিণ অংশে পদ্মা নদী ও পূর্ব অংশে মেঘনা নদীর একাধিক শাখা নদী প্রবাহিত হয় বারো মাস এখানে। সেই হিসেবে এখানকার জনবসতিরা বেশিরভাগ অংশই জীবিকা নির্বাহের জন্য নদীর মাছের ওপর নির্ভরশীল। তবে এখানকার ১০ শতাংশ মানুষ ঢাকার আলু বাজারে স্যানিটারী ব্যবসা ও ঢাকা স্টেডিয়ামে মোবাইল ব্যবসার সাথে জড়িত। এদেও নেতৃত্বে এলাকাটি প্রকৃত অর্থে পরিচালিত হয়ে থাকে। তারা ঢাকা বসবাস করলেও ছুটি ছাটাতে গ্রামে আসে।
এখানে অন্যান্য জনবসতিরা স্থানীয় কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এখানকার বেশিরভাগ মানুষই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে থাকে। এটি নদী বেস্টিত হওয়ার কারণে এখানকার উঠতি বয়সের যুবকরা ও মধ্য বয়সের মানুষেরা বেশিরভাগ সময়ে অলস জীবন যাপন করে থাকে। এখানে ছোট আকারে একটি বাজার রয়েছে। সেখানে নানা বয়সের লোকেরা চায়ের দোকানে সকাল বিকেল আড্ডা দিয়ে থাকে। এখানে কালিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে একটি। আর কোন শিক্ষা ব্যবস্থা নেই এখানে। প্রাথমিকের পরে এখানকার শিক্ষার্থীদেরকে ছুটতে হয় পাশের এলাকার স্কুলের দিকে। এখানে চিতলিয়া থেকে নদী পথে ট্রলার যোগে আসা যায়। তবে ভাড়া অনেক বেশি। বেশি লোকজন না হলে ট্রলার আসতে চায় না এখানে। সড়ক পথে আসতে হলে বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকা থেকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয়ে তবেই এখানে অটো দিয়ে আসা যায়। তবে জনপ্রতি এখানে ভাড়া হচ্ছে ২০ টাকা। অটো সম্পূর্ণ না ভরলে সেটি এখান থেকে ছাড়ে না। তবে বেশি টাকা দিয়ে রির্জাভে যাওয়া যায়। এখানে একমাত্র সড়ক পথে কয়েক মাইলের এ রাস্তাটি নির্মাণে অবকাঠামো গড়ে উঠেছে তিন ধরণের। প্রথমটি হচ্ছে বাংলাবাজার থেকে শুরুর রাস্তাটি কিছুটা ইটের সুরকি ও কোথাও কোথাও আবার শুধু ইট বিছানো রাস্তার ওপরে। তার পরের অংশের মধ্যে ভাগে রয়েছে আরসিসি পাকা রাস্তা। তারপরে কালিরচর বাজারের শেষ সীমানায় রয়েছে কাঁচা মাটির রাস্তা। এ তিন ধরণের এ রাস্তায় এখানকার মানুষের নানাভাবে ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। এখানে রাত বাড়লে অটোতে ভাড়াও বেড়ে যায়। এখানে সরাসরি সড়ক পথ না থাকার কারণে অসুস্থ্য রোগিরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় মধ্যে পরে থাকেন। এখানে সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় এখান থেকে একটি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি চিতলিয়া বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নদী পথকে সুরক্ষা দিতে এখানে কালিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এক সময়ে নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটি এখানে আর নেই। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এখানকার রাস্তাঘাটের প্রধান সমস্যা কারণে এখানে সেটি সরিয়ে নেয়া হয় বলে এখানকার বসতিরা ধারণা করছেন। এখানকার বসতিদের দাবি হচ্ছে এখানে পূণাঙ্গ রাস্তাঘাট যেন তৈরি করেন সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা।
কালিরচরের বাসিন্দা নিজাম বলেন, অনেক বছর ধরে এ রাস্তাটি এ ধরণের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিন্তু এখানে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *