বিশ্বের কোনো মুসলিম দেশে গণতন্ত্র নেই, নেই জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চা

জিয়া-উল হক:
মুসলিম দেশগুলোতে ভিনদেশি এজেন্ট তৈরি হয় কেন? আমার মতে শাসকদের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও ক্ষমতার লোভ। সেই ছোট কাল হতে শুনে আসছি, মীর জাফরদের কারণে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত যায়। ৭১সালেও পাকিস্তানের দোসর ছিল। আর বর্তমানে র-এর এজেন্টে দেশ ভরপুর। যদি ভারতের সাথে আমাদের কোনো সংঘর্ষ হয়, তাহলে তারা মীর জাফরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।
বলতে গেলে, বিশ্বের কোনো মুসলিম দেশে গণতন্ত্র নেই, নেই জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চা। মুসলিম শাসক রাজতন্ত্রের নামে একনায়ক ও স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে। একবার ক্ষমতায় বসলে আর যেতে চায় না। মুসলিম দেশগুলোতে কোনো নাগরিক অধিকার নেই, বাকস্বাধীনতা নেই, সরকারী অপরাধের প্রতিবাদ নেই। সরকারের সমালোচনা করলেই মৃত্যু দন্ড। মুসলিম শাসক রাষ্ট্রীয় সকল সম্পদের মালিকানা ভোগ করে। আর নাগরিকরা প্রজার মতো জীবন যাপন করে। নাগরিক শাসকের দয়ায় বেঁচে থাকে। তৈরি হয় সাদ্দাম, গাদ্দাফি, বেন আলী আর শেখ হাসিনার মত স্বৈরশাসক। ফলে কী হয়? তৈরি হয় একটি প্রত্যয়, যেকোনো মূল্যে সরকারের পতন। হাত মিলানো হয় রাষ্ট্রীয় শত্রুর সাথে। যেমন আমেরিকা ও ইসরাইলের ব্যাক আপে সিরিয়ার পতন, আমেরিকার সমর্থনে ইরাকে পতন, ফ্রান্স ও আমেরিকার সমর্থনে লিবিয়ায় পতন, আরব বসন্তের কারণে বেন আলীর পতন। এই সবগুলো পতনই ঘটেছে নিজ দেশের নাগরিকদের দ্বারা, শুধু ইসলামের শত্রুদের সমর্থনে। তাদের কিছু করার নেই। তারাও যে মুক্তির স্বাদ পেতে মরিয়া। যদিও কেউ কাঙ্ক্ষিত মুক্তি পায়নি। কারণ যাদের সমর্থনে সরকার পতন ঘটানো হয়েছে তারাও কিন্তু তাদের মুক্তি দিতে আসেন নি। এসেছেন নিজ স্বার্থ হাসিল করতে। এই যে আমরাও কি ফ্যাসিবাদী হাসিনার পতনে যে কোনো দেশের, বিশেষ করে পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপ কামনা করিনি বা নেই নি? যাদের সমর্থনে এই বিজয়, তাদের অন্যায় আবদার রাখতেই হয়। এইভাবে মুসলিম দেশগুলোতে পরনির্ভরশীল বা ইসলামের শত্রু নির্ভর হয়ে পরে। গণতন্ত্রহীনতার কারণে ২ কোটি ইহুদি ২০০ কোটি মুসলিমকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে চায়। আর প্রতিটি মুসলিম দেশ একে অপরের পিছনে কাঠি করে। ফ্রান্স – ইংল্যান্ড ১০০ বছরের যুদ্ধের পর আজ মিত্র। জাপানে পারমাণবিক বোমা হামলার পরও জাপান আমেরিকার মিত্র। দুটি বিশ্বযুদ্ধের পরও জার্মান আমেরিকা মিত্র। হলোকাস্ট ঘটনার পরও জার্মান ইসরাইল মিত্র। আর আমরা পরে আছি শিয়া- সুন্নী নিয়ে। মূলত গণতন্ত্রই মুক্তির একমাত্র পথ। মানুষ কথা বলতে পারলেই রাগ ক্ষোভ মিটে যায়। আর ইসলামেরও মূলমন্ত্র গণতন্ত্র। হাদীস মতে, কোনো সিদ্ধান্ত অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে যা গণতন্ত্রের ধারণা। মধ্যপ্রাচ্যে রাজতন্ত্রের বিনাশ হলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *